রাজধানীর তুরাগে স্ত্রীর (১৭) সঙ্গে বন্ধুকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে মাথা ঠিক রাখতে পারেননি ইমাম হোসেন হৃদয় (২২)। তাই হাতের কাছে পাওয়া ছুরি দিয়ে বন্ধু রাসেলকে আঘাত করে খুন করেন।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে র্যাবকে এমন তথ্য দিয়েছে আটক হৃদয়।
শনিবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-৮ এর কোম্পানি কমান্ডার শহিদুল ইসলাম গণমাধ্যমে তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
শুক্রবার গভীর রাতে বরগুনার আমতলী উপজেলার আঠারোগাছিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ গাজিপুরে খালাতো ভাইয়ের বাড়ি থেকে হৃদয়কে আটক করে পটুয়াখালী র্যাবের একটি বিশেষ দল। ঘটনার পর থেকে থেকে ওই বাড়িতে আত্মগোপনে ছিল হৃদয়।
আটক হৃদয়ের বাড়ি কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর উপজেলার ময়নামতি এলাকায়।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাব জানায়, তুরাগ থানার বৃন্দাবন বস্তির ১৭ নম্বর সেক্টরে রাসেল ও তার বন্ধু ইমাম হোসেন হৃদয় বসবাস করতেন। বন্ধুত্বের সূত্র ধরে তারা একে অপরের বাসায় যেতেন।
গত ৪ জানুয়ারি সন্ধ্যায় হৃদয় তার বাসায় গিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে রাসেলকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখতে পায়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে হৃদয় একপর্যায়ে বন্ধু রাসেলের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়ায়। এরপর রাসেল ও স্ত্রী সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে জড়িয়ে পরে হৃদয়। ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে হাতের কাছ পাওয়া একটি ছুরি দিয়ে রাসেলকে আঘাত করে হৃদয়।
এ সময় স্ত্রী রাসেলকে বাঁচাতে আসলে তাকেও আঘাত করা হয়। রাসেল ও তার স্ত্রী মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। এসময় ঘটনাস্থল ত্যাগ করে হৃদয়। বাসে পটুয়াখালীর কুয়াকাটার উদ্দেশে রওনা দেয় সে। পরে খালাতো ভাইয়ের বাড়িতে আশ্রয় নেয়।
র্যাব আরও জানায়, হতাহতের ঘটনার পরে হৃদয় তার শ্বশুরকে ফোন করে জানায়। এরপর রাসেল ও স্ত্রীকে উদ্ধার করে দ্রুত শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু অতিরিক্ত রক্ত ক্ষরণের ফলে রাসেলের মৃত্যু হয় বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়।
পরে ৫ জানুয়ারি নিহত রাসেলের বাবা সোহরাব হাওলাদার বাদী হয়ে তুরাগ থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। ওই মামলায় হৃদয়কে অভিযুক্ত করা হয়।
চাঞ্চল্যকর বিষয়টি গণমাধ্যমে ছড়িয়ে পরলে র্যাবের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে পটুয়াখালীর টিম তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে হৃদয়ের অবস্থান নিশ্চিত করে অভিযান চালায়।
এরপর শুক্রবার বরগুনার আমতলী উপজেলার আঠারোগাছিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ গাজিপুরের বাসিন্দা হৃদয়ের খালাতো ভাই মনিরুল ফকিরের বাড়ি থেকে তাকে আটক করে র্যাব।