আলুর কেজি ৪০০ টাকা!


 বগুড়ায় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের নবান্ন উৎসব উপলক্ষে শহরের ফতেহআলী ও রাজাবাজারে অন্যান্য নতুন শাক-সবজির পাশাপাশি পাকরি আলু উঠেছিল। তবে দাম ছিল আকাশছোঁয়া। প্রতি কেজি নতুন আলু বিক্রি হয়েছে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা কেজি দরে। বাধ্য হয়ে প্রথা পালনে অনেকেই এ আলু কিনেছেন।


বগুড়া শহরের রাজাবাজার আড়ৎদার ও সাধারণ ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পরিমল প্রসাদ রাজ জানান, প্রতি বছর অগ্রহায়ণের প্রথম দিনে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা নবান্ন উৎসব পালন করে থাকেন। এদিন পরিবারের মুরব্বি বা বউ-ঝিরা দিনভর উপোস করেন। নতুন আলু, কপি, শিমসহ বিভিন্ন শাক-সবজি দিয়ে তরকারি রান্না করা হয়। একটি বড় প্লেটে এসব খাবার সাজানো হয়। এরপর প্রথমে পূর্বপুরুষদের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করে তাদের উদ্দেশ্যে ওই খাবার উৎসর্গ করা হয়। শেষে উপবাসে থাকা নারী বা পুরুষরা খাবার খেয়ে উপবাস ভঙ্গ করেন। 


তিনি আরও জানান, প্রতি বছর নবান্নের দিনে বাজারে নতুন আলু উঠে এবং উচ্চদরে বিক্রি হয়ে থাকে। বৃহস্পতিবার শহরের দুটি বড় বাজারে তিন থেকে চার মণ নতুন পাকরি আলু বিক্রির জন্য আনা হয়েছিল। প্রতি কেজি আলু ৩০০ থেকে ৪০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এ আলু কিনতে অনেকে বাজারে হুমড়ি খেয়ে পড়েন। প্রথা পালনে অনেকে উচ্চদামে আলু কিনেছেন। তবে বাজারে পুরাতন আলু ২০ থেকে ২৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। বাজারে অন্যান্য শাক-সবজির দাম অনেকটা স্থিতিশীল রয়েছে।


ফতেহ আলী বাজারের কাঁচামাল ব্যবসায়ী শামসুল হক ও রাজাবাজারের বিনয় রাজ জানান, নবান্নের দিন আলুর দাম বেশি হয়। এ দিনের উৎসবকে সামনে রেখে কৃষকরা অধিক লাভের আশায় সামান্য কিছু আলু চাষ করেন। আমরা বেশি দামে কিনি বলেই বেশি দামি বিক্রি করে থাকি। এতে আমাদেরও বাড়তি আয় হয়।


রাজাবাজারে আলু কিনতে আসা বিনীতা রায় জানান, তিনি ২০০ টাকায় আধা কেজি আলু কিনেছেন। উৎসব পালনের জন্য বেশি দামে আলু কিনতে কষ্ট হয়নি।


শহরের চেলোপাড়ার সুকুমার ও চন্দন জানান, এক পিস আলুর দাম ১৫ টাকা থেকে ২০ টাকা। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কাছে নবান্ন অনেক বড় উৎসব; তাই তারা বেশি দামে আলু কিনেছেন। 


শহরের মালতিনগরের কল্যাণ দাস বলেন, নবান্নের দিনে সব শাক-সবজির দাম বেশি হয়ে থাকে। তাই বলে কখনও এক কেজি আলু ৪০০ টাকায় বিক্রি হয়নি। এবার কৃষকরা অধিক মুনাফা করছেন।

Post a Comment

Previous Post Next Post