আ’লোচিত পথশি’শু মা’রুফের খোঁজ পাওয়া গেছে। গণমাধ্যমে শি’শুটির নি’খোঁজ সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর তার সন্ধান দেয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সহম’র্মিতা ফাউন্ডেশনের উদ্যোক্তা পারভেজ হাসান। শনিবার (২৪ এপ্রিল) ভোরে পারভেজ হাসান পথশি’শু মা’রুফের সঙ্গে তার বেশ কয়েকটি ছবি ফেসবুক পোস্ট করেছেন। পারভেজ তার ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘প্রিয় শুভাকাঙ্ক্ষী ভাই-বোনেরা। আপনারা যারা পথশি’শু মা’রুফ নি’খোঁজ এমন সংবাদ ছাপাচ্ছেন। তাদের উদ্দেশে বলতে চাই- মা’রুফ নি’খোঁজ না। ও দিনের বেলায় স্বাভাবিক অবস্থায় থাকে না। সে কারণে যেখানে-সেখানে পড়ে থাকে। সে আগে যেমন ছিল তেমনি আছে। সাহরির আগেও আম’রা মা’রুফকে দেখতে গেলাম। গিয়ে আগের মতোই অস্বাভাবিক অবস্থায় পেয়েছি।’
তিনি আরও লিখেছেন, ‘আম’রা চেষ্টা করে যাচ্ছি তাকে কাউন্সিলিং করে কিভাবে সুন্দর জীবনে ফেরানো যায়। এই জন্য আমাদের সময় লাগবে। কারণ মানসিকভাবে সে সুস্থ না। আমাদের প্রশাসনের সাথে কথা হয়েছে। তারা আমাদের স’ম্পর্কে সব তথ্য রেখেছে। আমাদের স’ম্পর্কে প্রশাসন খোঁজ নিবে। তারপর তারা বিবেচনা করবে মা’রুফকে আমাদের হাতে তুলে দিবে কিনা। আম’রা আমাদের চেষ্টার ত্রুটি রাখছি না। তাকে সুন্দর জীবনে ফেরাতে। শুধু মা’রুফ নয়, মা’রুফের পাশাপাশি আশেপাশে যে কজন পথশি’শু এমন বিপদগ্রস্ত, আম’রা তাদেরও সুন্দর লাইফে ফেরাতে উদ্যোগ নিব ধীরে ধীরে।’
প্রসঙ্গত, রাজধানীর জর্জকোর্ট এলাকায় একটি অনলাইন নিউজপোর্টালের লাইভ চলাকালীন হঠাৎ ক্যামেরার ফ্রেমে ঢুকে লকডাউন নিয়ে প্রশ্ন তুলে রাতারাতি আলোচনায় আসে পথশি’শু মা’রুফ। সে থাকে পুরান ঢাকার বাহাদুর শাহ পার্ক ও জর্জকোর্ট এলাকায়। কিন্তু বৃহস্পতিবার (২২ এপ্রিল) থেকে মা’রুফকে বাহাদুর শাহ পার্ক এলাকায় পাওয়া যাচ্ছিল না। সে কোথায় আছে তা কেউ বলতে পারছে না। এর আগে, বুধবার (২১ এপ্রিল) দুপুরে শি’শুটির খোঁজে গেলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তখন জানা যায়, রাত ৩টার দিকে একটি সাদা গাড়িতে কয়েকজন লোক এসে তাকে পাঁচশ টাকা ও জামা কাপড় দেবে বলে গাড়িতে করে রায়ের সাহেব বাজারের দিকে নিয়ে যায়। এরপর থেকে তাকে আর দেখা যায়নি।
এ নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশি হলে সূত্রাপর থা’নার ভা’রপ্রাপ্ত কর্মক’র্তা মামুনুর রহমান বলেন, আম’রাও শি’শুটিকে খুঁজছি। এর আগে, সোমবার (১৯ এপ্রিল) দুপুরে সময়ের কণ্ঠস্বর নামে একটি অনলাইন সংবাদ মাধ্যমের প্রধান প্রতিবেদক পলা’শ মল্লিক ফেসবুকে লাইভ করার সময় ক্যামেরার ফ্রেমে ঢুকে পড়ে পথশি’শু মা’রুফ। সে বলে, ‘আচ্ছা, এই যে লকডাউন দিয়েছে, সামনে ঈদ, মানুষ খাবে কী'’? মাননীয় মন্ত্রী যে লকডাউন দিয়েছে এটা একটা ভু’য়া। থ্যাংক ইউ!’
ওইদিনের এমন মন্তব্যের পর কোর্ট চত্বরে রাত ১০টার দিকে পু’লিশে মে’রেছে বলে দাবি করে সে। পথশি’শু মা’রুফের একটি ছবিতে শি’শুটির চোখ ফোলাকে কেন্দ্র করে তাকে মা’রধর করা হয়েছে বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনা চলতে থাকে। কিন্তু শি’শুটিকে ওই লাইভে বক্তব্য দেওয়ার জন্য কেউ মা’রধর করেনি বলে জানিয়েছে মা’রুফ ও তার সঙ্গে থাকা অ’পর পথশি’শুরা। মঙ্গলবার (২০ এপ্রিল) রাত ১২টার দিকে বাহাদুর শাহ পার্কে মাটিতে শুয়ে থাকতে দেখা যায় পথশি’শু মা’রুফকে। ড্যান্ডির নে’শায় আসক্ত ছে’লেটিকে ঘুম থেকে তুলে কেউ মে’রেছে কিনা জিজ্ঞেস করলে ‘না’ বলে সে ঘুমিয়ে পড়ে। কিন্তু তার চোখের ফোলা নিয়ে তার সঙ্গে থাকা পথশি’শুরা বলে, তাকে কেউ মা’রধর করেনি তবে যে কোনো মাধ্যমে চোখে আ’ঘাত লেগেছে।
তারা বলে, নে’শার ঘোরে একেক সময় একেক মন্তব্য করছে পথশি’শু মা’রুফ। এ বিষয়ে পারভেজ হাসান ফেসবুক পোস্টে লেখেন, একটা বিষয় ক্লিয়ার করি। মা’রুফকে কারা মে’রেছে অনেকেই জানতে চেয়ে অনেক উল্টো পালটা কমেন্ট করছেন। তাদের উদ্দেশে বলি, মা’রুফ প্রতিদিনই অস্বাভাবিক থাকা অবস্থায় তার বন্ধুদের সাথে মা’রামা’রি করে। এটা তারই একটা অংশ। সবাই এই ছোট্ট বিষয়টিকে অন্যদিকে নিয়ে ওর জীবনটা হু’মকির মুখে ফেলবেন না।
পথশি’শুদের কাছ থেকে জানা যায়, আগে বাহাদুর শাহ পার্ক এলাকায় সরকারের পক্ষ থেকে খাবার দেওয়া হতো, এখন দেওয়া হয় না। লকডাউনের আগে মানুষের কাছে চেয়ে নিয়ে খেত, এখন সে সুযোগও কম। রাস্তায় মানুষ নেই, দোকানপাটও বন্ধ, মানুষের কাজ নেই। ‘আমাদের কে খাবার দেবে? কে টাকা দেবে? আম’রা খাব কী'’?’ এমন প্রশ্ন মা’রুফসহ অনেক পথশি’শুর।