এক কথায় যাকিছুর অস্তিত্ব আছে তা নিয়েই মহাবিশ্ব। পৃথিবী, চন্দ্র, সূর্য, সকল গ্রহ-উপগ্রহ, তারা, উল্কা, ধুমকেতু, নিহারিকা, ব্লাক হোল এবং হোয়াইট হোল সবই মহাবিশ্বর অংশ মাত্র। মহাবিশ্ব সৃষ্টি হল কিভাবে? মনের ভিতর এই প্রশ্নটা জন্মায়নি এমন মানুষ মহাবিশ্বে নেই। আমদের মত সাধারন মানুষরা এই প্রশ্নের উত্তর পায়নি এবং খুব বেশি ভাবেও নি, কিন্তু একদল অসাধারণ মানুষ বসেও থাকেনি।
প্রাচীন কালে কিছু মানুষ ভাবত মহাবিশ্ব চিরকাল এমনি ছিল এবং এটা চির স্থির, এরিস্টটলও তাই ভাবতেন। এর পর শপ্তদশ শতাব্দীতে ওল্ড টেস্টামেন্টের লোকদের বয়স যোগ করে Bishop Ussher বলেন মহাবিশ্বের কাল শুরুর হয়েছে ৪০০০ খ্রিস্ট পূর্বাদ্বে।
মহাবিশ্বর সৃষ্টি রহস্য যানতে হলে প্রথমে মহাবিশ্ব সম্পর্কে জানতে হবে। এরিস্টটল টলেমীর যুগে তারা জানত না পৃথিবী সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে নাকি যূর্য পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করে। এইত ১৫১৪ সালে নিকোলাস কোপার্নিকাস প্রথম ধারনা দেন যে পৃথিবী সহ অন্য গ্রহগুলো সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে। তার ধারনাও পুরোপুরি ঠিক ছিল না সে বলেছেন সূর্য স্থির।
কেপলার এবং গ্যালিলিও কোপার্নিকাসের তত্ত্বকে সমর্থন করেন এবং পরবর্তীতে কেপলার গ্রহগুলোর গতিপথের ব্যাখ্যা দিতে পেছেন যে এরা উপবৃত্তাকার পথে পরিভ্রমণ করে।
কেপলার যা পারেনি সেটা পারল বিখ্যাত পদার্থবিদ স্যার আইজ্যাক নিউটন। নিউটন দেখাতে পেরেছে মহাবিশ্বের বস্তুগুলো একে অপরকে একটা বল ধারা আকর্ষণ করে। কিন্তু নিউটনের তত্ত্ব মতে এই আকর্ষণ বলের কারনে সকল তারা গুলো এক জায়গায় জড়ো হওয়ার কথা কিন্তু তা কখনো হচ্ছে না কেন? নিউটন এই প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন মহাবিশ্বকে অসীম কল্পনা করে। মহাবিশ্ব অসীম এবং তারার সংখ্যাও অসীম তাই তারা নির্দিষ্ট কোনো বিন্দুতে একত্রিত হচ্ছে না।
একটা মজার ব্যাপার হল বিংশ শতাব্দীর আগে কেউ এটা চিন্তাই করেনি যে মহাবিশ্ব কি প্রসারণ হচ্ছে নাকি সংকুচিত হচ্ছে। এর আগে সবাই ভাবত মহাবিশ্ব চিরকাল এমনই ছিল, স্থির আর মহাবিশ্বকে এখন যেমন দেখছি এমনই সৃষ্টি হয়ে ছিল। আজব! হঠাৎ করে কিভাবে এতবড় মহাবিশ্ব সৃষ্টি হয়ে যায়? না মহাবিশ্ব এত বড় সৃষ্টি হয়নি।
এর পর ১৯২৯ সালে যখন Edwin Hubble প্রমান করেন যে মহাবিশ্ব সর্বদা প্রসারণ হচ্ছে। তারকা গুলো ক্রমাগত দূরে সরে যাচ্ছে। এই শুরু হল মহাবিশ্ব সৃষ্টির রহস্য বেরকার প্রথম ধারপ। কিভাবে?
মহাবিশ্ব যেহেতু প্রসারণ হচ্ছে তার মানে একসময় মহাবিশ্ব অনেক সংকুচিত ছিল। তখন মহাবিশ্বের ভর ছিলো অনেক বেশি ১ এর পিঠে ৫১ টা শূন্য কেজি বুঝতেই পারছেন কত ভর। আর ঘনত্ব ছিল ১০^২১ কেজি পার মিটার কিউব। এত বেশি ঘনত্বর কারনে এর অভ্যন্তরে ছিল প্রচন্ড তাপ ও চাপ। তাপ ও চাপের কারনে এই ডিম্বাকার বস্তুর বিস্ফারণ ঘটে। এটা ঘটে ১৫০০-২০০০ কোটি বছর আগে। এটাই বিখ্যাতা বিগ ব্যাং!
বিস্ফোরনের পর তার কোন একটি ছোট টুকরাই হল আমাদের পৃথিবী।
এই বিস্ফারণের থেকেই কালের শুরু। মহাকর্ষ অভিকর্ষ শুরু। আর বস্তুগুলো বিস্ফোরণের সময় যে বেগ নিযে ছুট ছিল সেই বেগের কারনে আজও ছুটছ -যেটা প্রথম দেখে হাবল।
তাহলে এভাবে গ্রহ নক্ষত্র গুলো কি ছুটতেই থাকবে?
জানব এই সম্পর্কে আগামী পর্বে।
কিছু জিজ্ঞাসা থাকলে কমেন্ট বক্স আছেতো!
সূত্র : 1. En.Wikipedia.org
2. A Brief History Of Time