জনাব আবুল সাহেব একদিন বাবুলপুর যাওয়ার জন্য বের হলেন। কিছুদূর যাওয়ার পর তার সামনে আসল দুটি রাস্তা -একটি ডানে অপরটি বামে। কোন রাস্তায় বাবুলপুর তা তিনি চিনতে পারছেন না। তিনি বুঝতে পারছেন না ডানে যাবেন নাকি বামে? এটা নিয়ে আবুল সাহেব খুবই চিন্তিত।
হঠাৎ করে আবুল সাহেব দুজন লোক দেখতে পেলেন। তিনি এক জনকে জিজ্ঞাসা করলেন যে, বাবুলপুর যাওয়ার রাস্তাটি কোন দিকে?
প্রথম জন কিছু একটা উত্তর দিল। আবুল সাহেব লোকটির কথা ভালভাবে বুঝতে পারলেন না। তিনি আবার দ্বিতীয় জনকে জিজ্ঞাসা করলেন যে, প্রথম জন কী বলেছে? দ্বিতীয় জন ও কিছু একটা উত্তর দিল এবং বলল আমাদের দুজনের মধ্যে একজন কিন্তু মিথ্যাবাদী। আবুল সাহেব ভারী বিপদে পড়লেন। কোন দিকের রাস্তায় গেলে বাবুলপুর যেতে পারবেন?
আবুল সাহেব গনিতে খুব ভালো না হলেও তার গনিতের চমৎকার কনসেপ্ট গুলো বাস্তবে কাজে লাগানোর ভালো অভিজ্ঞতা আছে। আবুল সাহেব রাস্তার পাশে বসে পরলেন। ভাবতে লাগলেন কি করা যায়। চট করে আবুল সাহেবের মাথায় একটা বুদ্ধি এসে গেল। তিনি হিসাব করা শুরু করলেন, ধরা যাক প্রথম জন সত্যবাদি। তিনি সঠিক পথ বলেছেন। (+) তাহলে দ্বিতীয় জন মিথ্যুক। প্রথম জনের সঠিক উত্তর সে ভুল বলেছে। অর্থাৎ (+) কে (--) বানিয়েছে। তাই সঠিক পথ হবে দ্বিতীয় জনের উত্তরের বিপরিত। ঐ যে প্লাসে মাইনাসে মাইনাস। আর মাইনাস মানেই তো বিপরিত।
এবার ধরা যাক প্রথম জন মিথ্যাবাদী । প্রথম জনের উত্তর ভুল(--)। দ্বিতীয় জন যেহেতু সত্যবাদি তাই সে প্রথম জনের উত্তর যা ছিল, তাই বলেছে। কারন তার কাছে প্রশ্ন করা হয় "প্রথম জন কি বলেছে?" তাই সে সত্য উত্তর দিয়েছে। অর্থাৎ ( +++) দ্বিতীয় জন যদিও সত্য (++) বলেছে, সে প্রথম জনের উত্তর (----) কে (----) ই রেখেছে, আর পাল্টায় নি, কারণ পাল্টালে তো আর সত্য বলা হলো না। ঐ যে মাইনাসে প্লাসে মাইনাস। তাই সঠিক দিক হবে এই উত্তরের বিপরিত। কারন মাইনাস মানেই বিপরিত।
অর্থাৎ দ্বিতীয় জন উত্তর যাই বলুক, আবুল সাহেব কে তার বিপরিতে যেতে হবে। আবুল সাহেব হাঁটা শুরু করলেন। এমন একটা চমৎকার সমাধান বের করতে পেরেও আবুল সাহেব একটুও উত্তেজনা বোধ করেন নি। কারণ এটা আবুল সাহেবের কাছে নিয়মিত একটা ঘটনার মত। সে এরকম বিভিন্ন বাস্তু সমস্যার সমাধান প্রায়ই করে। শুধু কনসেপ্টটা থাকে ভিন্ন।