শ্রমিক স্বামীর কাজ করা আয়ে সংসার চলে না। তাই ফুটপাতে রুটি বিক্রি করেন রিক্তা ইস'লাম (২৭)। সেই সংগ্রামী নারীই নির্বাচিত হয়েছেন সংরক্ষিত মহিলা আসনের ইউপি সদস্য। ফুটপাতের এক সামান্য দোকানি থেকে ইউপি সদস্য নির্বাচিত হওয়ায় হৈচৈ পড়ে গেছে খুলনার ফুলতলা সদর ইউনিয়নের সংরক্ষিত মহিলা আসনে (৪,৫ ও ৬নং ওয়ার্ড)।
জানা যায়, রিক্তা ইস'লামের বাবা মো. লিয়াকত খাঁ চায়ের দোকানদার। আর স্বামী পয়গ্রামের বাসিন্দা ইম'রান শেখ (৩০) টাইলস শ্রমিক। অষ্টম শ্রেণি পাস রিক্তা ৬-৭ বছর ধরে রাস্তার পাশে রুটি বিক্রি করেন। একমাত্র মে'য়ে তাবাচ্ছুম বুশরা স্থানীয় একটি মাদরাসার প্রথম শ্রেণিতে পড়ে।
এ ব্যাপারে এলাকাবাসী জানায়, রিক্তা খুবই গরীব। ফুলতলা বাজারের গরুহাট এলাকায় রাস্তার পাশে খুপড়ি ঘরের রুটির দোকানদার রিক্তা। বস্তিবাসীরা তাকে নির্বাচনে দাঁড়াতে উৎসাহিত করেন। গত বৃহস্পতিবার (১১ নভেম্বর) দ্বিতীয় দফা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ফুলতলা সদর ইউনিয়নের সংরক্ষিত মহিলা আসন থেকে মেম্বার নির্বাচিত হয়েছেন।
এদিকে কোনো কাজই ছোট নয় বলে মনে করেন এই নারী। তাইতো জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হওয়ার পরও যথারীতি দোকানে রুটি বানিয়ে বিক্রি করছেন। তবে আগের চেয়ে ক্রেতা এখন একটু বেশি। রিক্তার বিপক্ষে যারা প্রার্থী হয়েছিলেন তারা বেশ প্রভাবশালী। কিন্তু ভোটের মাঠে সবাইকে পরাজিত করেছেন রিক্তা।
এ ব্যাপারে স্বামী ইম'রান শেখ গতকাল শনিবার রাতে গণমাধ্যমকে বলেন, এলাকার সবার দোয়া ও সহযোগিতায় স্ত্রী' রিক্তা নির্বাচনে জিতেছে। ৬ প্রার্থীর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ১ হাজার ৯৬৩ ভোট পেয়েছে। দ্বিতীয় হওয়া মাহবুদা ইস'লাম নিপা একটু সমস্যা তৈরি করার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু প্রশাসন তার সমাধান করে দিয়েছে। এখন আর কোনো সমস্যা নেই। এলাকার মানুষ ভালোবেসে যে দায়িত্ব দিয়েছেন, স্ত্রী' যেন তার প্রতিদান দিতে পারে সেজন্য সবার সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি।
এ সময় এলাকাবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে রিক্তা বলেন, আমা'র মতো গরীব মানুষকে যারা ভোট দিয়েছেন, তাদের কাছে আমি চির ঋণী। নির্বাচনে আমা'র জয়ী হওয়াটা মেনে নিতে পারছিলেন না প্রতিদ্বন্দ্বী এক প্রার্থী। তিনি ফলাফল পাল্টানোর চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু পারেননি। এলাকার মানুষের জন্য কিছু করতে চাই। মানুষ যে ভালোবাসা দিয়েছে তার প্রতিদান দিতে চাই। এজন্য সবার সহযোগিতা কামনা করছি।