ইসরাইলে অস্র সহযোগীতা, তারপর যদ্ধ বিরতির ঘোষণা; কি চান জো বাইডেন?



ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে আট দিনের রক্তক্ষয়ী সহিংসতার পর যুদ্ধবিরতির পক্ষে সমর্থন জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। আজ মঙ্গলবার বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়।

জো বাইডেন গতকাল সোমবার ইসরায়েল-ফিলিস্তিনের মধ্যে যুদ্ধবিরতির পক্ষে তাঁর সমর্থন ব্যক্ত করেন। তিনি গতকাল ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে ফোনে কথা বলেন। এই ফোনকলেই বাইডেন ইসরায়েল-ফিলিস্তিনের মধ্যে যুদ্ধবিরতির পক্ষে তাঁর সমর্থন প্রকাশ করেন।


বাইডেন-নেতানিয়াহুর মধ্যকার ফোনালাপ নিয়ে বিবৃতি দিয়েছে হোয়াইট হাউস। বিবৃতিতে বলা হয়, মার্কিন প্রেসিডেন্ট যুদ্ধবিরতির পক্ষে তাঁর সমর্থন প্রকাশ করেছেন। একই সঙ্গে তিনি ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছেন যে, দুই পক্ষের মধ্যে সংঘাত বন্ধে মিসরসহ অন্যান্য অংশীদার দেশের সঙ্গে কাজ করছে যুক্তরাষ্ট্র।

যুদ্ধবিরতির পক্ষে বাইডেন এখন তাঁর সমর্থন ব্যক্ত করলেও রোববার ইসরায়েল-ফিলিস্তিনের মধ্যে সংঘাত বন্ধে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের আহ্বান সংবলিত বিবৃতি আটকে দেয় যুক্তরাষ্ট্র। ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠ মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের আপত্তির কারণে নিরাপত্তা পরিষদের রোববারের বৈঠক থেকে কোনো ফল আসেনি।

ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাত দ্বিতীয় সপ্তাহে গড়িয়েছে। সংঘাত বন্ধের কোনো লক্ষণ এখন পর্যন্ত নেই।


গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের হামলায় এখন পর্যন্ত অন্তত ২১২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে ৬১ জন শিশু রয়েছে।

জাতিসংঘ জানিয়েছে, ইসরায়েলি বিমান হামলায় গাজায় ৩৮ হাজার মানুষের ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। বাস্তুচ্যুত হয়েছে আড়াই হাজার।


হামলার পাল্টা জবাব হিসেবে গাজা থেকে ইসরায়েলের দিকে রকেট ছোড়া হচ্ছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর ভাষ্য, হামাস এখন পর্যন্ত ৩ হাজারের বেশি রকেট হামলা চালিয়েছে। ইসরায়েলি পক্ষে ১০ জন নিহত হওয়ার তথ্য জানানো হয়েছে।

ইসরায়েল-ফিলিস্তিন ইস্যুতে রোববার জরুরি বৈঠকে বসে ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি)। বৈঠকে ফিলিস্তিনি জনগণের জন্য ‘সুরক্ষা বাহিনী’ গঠনের প্রস্তাব তোলে তুরস্ক।


ইসরায়েল-ফিলিস্তিনের চলমান সংঘাতের সূত্রপাত মূলত গত ১৩ এপ্রিল। পবিত্র রমজান মাসের প্রথম রাতে জেরুজালেমে দামেস্ক গেট বন্ধ করে দেওয়ার ঘটনায় সেদিন পূর্ব জেরুজালেমে ইসরায়েলি পুলিশের সঙ্গে ফিলিস্তিনি বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ হয়। এরপর থেকেই উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। এই উত্তেজনা চরমে পৌঁছায় পূর্ব জেরুজালেমের শেখ জারাহ এলাকায় কয়েকটি ফিলিস্তিন পরিবারকে উৎখাতের মাধ্যমে।


২ মে শেখ জারাহ এলাকায় ইসরায়েলি পুলিশ ও বিক্ষোভকারীদের কয়েক দফায় সংঘর্ষ হয়। উত্তেজনার পরিপ্রেক্ষিতে শেখ জারাহ এলাকায় ফিলিস্তিনি পরিবারগুলোকে উৎখাতের বিষয়ে ইসরায়েলের সুপ্রিম কোর্ট ৯ মে শুনানি পিছিয়ে দেন। তবে এতে উত্তেজনা থামেনি। ১০ মে পবিত্র আল-আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণে পুলিশের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এরপর হামাস রকেট হামলা চালালে পবিত্র ঈদুল ফিতরের দিন থেকে বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। এই সংঘাত এখন পর্যন্ত অব্যাহত আছে।



এবারের এই সহিংসতাকে বলা হচ্ছে ২০১৪ সালের সংঘাতের পর সবচেয়ে বড় সংঘাত। ২০১৪ সালের ওই সংঘাতে ২ হাজার ২৫১ ফিলিস্তিনি নিহত হন। ইসরায়েলের পক্ষে প্রাণহানি ছিল ৭৪, যাঁদের অধিকাংশই সেনাসদস্য।

Post a Comment

Previous Post Next Post