শেয়ার ব্যবসায় সফল হওয়ার কৌশল

 


কিভাবে শেয়ার ব্যবসায় সফল হবেন? প্রতিদিন হাজারো বিনিয়োগকারীর একই প্রশ্ন। প্রশ্নটির উত্তর দেয়া যায় এক কথাতেই। তাহলো, দেখে শুনে বুঝে শেয়ার কিনলে খুব সহজেই মুনাফা করা যায়। কিন্তু কিভাবে বুঝবেন, আপনি যে কোম্পানির শেয়ার কিনছেন, সেটি ভালো কোম্পানি। আবার শুধু ভালো কোম্পানি হলেইতো হবে না- কখন কিনবেন, কি দামে কিনবেন সেই কোম্পানির শেয়ার? আবার শুধু কিনলেইতো হবে না, বিক্রি করতে হবে সঠিক সময়ে, সর্বোচ্চ মুনাফায়। তাহলেই না- আপনি লাভবান হবেন।


আপনার সঠিক সিদ্ধান্তই পারবে লক্ষ্যে পৌঁছে দিতে


টাইকুন একটি জাপানী শব্দ। ‘টাই’ অর্থ মহান, ‘কুন’ অর্থ একজন সমর নায়ক। টাইকুন এমন এক ব্যক্তি যিনি উচ্চাকাঙ্খা ও সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে নিজকে এক গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে অধিষ্ঠিত করেছেন। সফল শেয়ার ব্যবসায়ী হতে হলে আপনাকেও টাইকুন মানসিকতা অর্জন করতে হবে।


শেয়ার বাজারে প্রতিদিন, প্রতি সপ্তাহে, বিভিন্ন পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে বিভিন্ন ধরনের ব্যবসায়িক সুযোগ সৃষ্টি হয়। এ সুযোগ সৃষ্টি হওয়ার কারণ ও ধরন বিষয়ে আগাম ধারণা পাওয়ার জন্য বহু ধরনের দিক নিদের্শনা রয়েছে। অনেক শেয়ার ব্যবসায়ী এসব দিক নির্দেশনা কাজে লাগিয়ে হয়েছেন কোটিপতি।


শেয়ার বাজারের চরম মন্দাবস্থায়ও অনেকে প্রচুর অর্থ আয় করছেন। অথচ কীভাবে সুপ্ত সম্ভাবনাসমূহ কাজে লাগাতে হবে তা জানেন এবং বুঝেন এমন শেয়ার ব্যবসায়ীর সংখ্যা আমাদের দেশে অতি নগণ্য। যারা ব্যর্থতার পরেও শেয়ার ব্যবসাতে লেগে থাকেন তারা কোন না কোন সময়ে সফলতার দ্বার প্রান্তে পৌঁছে যান, সফল ব্যবসায়ী হয়ে ওঠেন। তবে এই সফলতার জন্য প্রয়োজন ধৈর্য্য ও সহিষ্ণুতার। প্রকৃতপক্ষে যতবেশি জ্ঞান অর্জন করা যাবে, সফলতার মাত্রাও সে পরিমাণে বৃদ্ধি পাবে।


 


শেয়ার ব্যবসা কোন প্রকার রহস্য বা ভাগ্যের ব্যাপার নয়। এটা এক ধরনের বিশেষ দক্ষতা; যা অর্জন করা যে কোনো ব্যবসায়ীর পক্ষেই সম্ভব। বিশেষ দক্ষতা বলতে সঠিক সময়ে সঠিক দরে সঠিক শেয়ার বেচা-কেনা করার দক্ষতাকে বুঝানো হয়েছে। এ বিষয়ে একজন শেয়ারবাজার বিশেষজ্ঞ মূল্যবান একটি পরামর্শ দিয়েছেন।


 


‘শেয়ার বাজারে যখন মন্দাবস্থা বিরাজ করবে, এমনকি পত্র-পত্রিকাও শেয়ার বাজার বিষয়ে চরম হতাশা প্রকাশ করবে তখনই যথাযথ বিবেচনার ভিত্তিতে সুপ্ত সম্ভাবনাময় শেয়ার ক্রয় করতে হবে এবং যখন বেশিরভাগ মানুষ একটি বিশেষ কোম্পানির শেয়ারকে অপেক্ষাকৃত ভালো এবং প্রচুর সম্ভাবনাময় মনে করবে সে সময়ে ঐ শেয়ারটি বিক্রী করার জন্য আপনাকে প্রস্তুত থাকতে হবে।’


 


সফলতার জন্য একজন শেয়ার ব্যবসায়ী (ডে-ট্রেডার) হিসেবে আপনাকে কোম্পানি ফান্ডামেন্টালের বিষয়টি নূন্যতম বিবেচনাতে নিয়ে শেয়ারের দর উঠানামায় ধরন বিশ্লেষণের ভিত্তিতে শেয়ার কেনা বেচা করার কৌশল আয়ত্ত্ব করতে হবে। তবে মেয়াদী বিনিয়োগের জন্য কোম্পানি ফান্ডামেন্টালের বিষয়টি অবশ্যই যথাযথ গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা প্রয়োজন। শেয়ার ব্যবসা নিয়ে ধারাবাহিক এই লেখায় সেসব বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।


 


আমার দীর্ঘ প্রায় দুদশকের বিনিয়োগ পরামর্শকের অভিজ্ঞতার আলোকে দেখা গেছে অতি তুচ্ছ কারণ, অমার্জনীয় অবহেলা, বেখেয়াল, অজ্ঞতা বা সামান্য পরিশ্রমের অভাবে বহু মানুষ বহু কষ্টে সঞ্চিত মুল্যবান সঞ্চয় ভুলভাবে বিনিয়োগ করে নিঃস্ব হয়েছেন।


অন্যদিকে সঠিক সিদ্ধান্ত, সময়োচিত উদ্যোগ, দুরদর্শিতা ও সৃজনশীল প্রতিভা কাজে লাগিয়ে বহু মানুষের জীবনে অভাবনীয় সফলতা এসেছে। প্রকৃতপক্ষে শেয়ার ব্যবসাতে সফলতা বা ব্যর্থতার ঘটনাটি লটারি বা জুয়া খেলাতে জয়ী হওয়ার মত ভাগ্যের ব্যাপার নয়। বরং এমন ধারণা একজন শেয়ার ব্যবসায়ীর জন্য ক্ষতিকর।


 


নিত্যনতুন বিনিয়োগের সুযোগ খুঁজে বের করুন


শেয়ারবাজার নিয়ে গবেষনা করে নিত্যনতুন বিনিয়োগের সুযোগ খুঁজে বের করুন। অন্যেরা যে ব্যবসায়িক সম্ভাবনার সন্ধান পাবে আগামীকাল, একজন টাইকুন ব্যবসায়ী হিসেবে আপনাকে আজই সেই শেয়ারটি ক্রয়ের সিদ্ধান্ত নিতে হবে। সাধারণ ব্যবসায়ীগণ যখন বিশেষ একটি শেয়ার ক্রয়ে আগ্রহী থাকবেন না তখনই সুপ্ত সম্ভাবনা বিশ্লেষণের ভিত্তিতে শেয়ারটি ক্রয় করতে হবে। সাধারণ ব্যবসায়ীগণ যখন শেয়ারটি ক্রয়ে উন্মুখ হয়ে উঠবেন তখন শেয়ারটি বিক্রী করে দিয়ে লাভ ঘরে তুলতে হবে। এসব ক্ষেত্রে সফলতাই আপনাকে একজন টাইকুনে পরিণত করবে।

Post a Comment

Previous Post Next Post