পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত সাধারণ বীমা খাতের কোম্পানি অগ্রণী ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। প্রায় এক বছর ধরে কোম্পানিটির শেয়ার দাম বাড়লেও গেলে সপ্তাহের দাম বাড়ার পালে নতুন করে হাওয়া লেগেছে।
এতে এক সপ্তাহেই কোম্পানিটির শেয়ার দাম বেড়েছে প্রায় ৩০ শতাংশ। আর বছরেরও কম সময়ের মধ্যে কোম্পানিটির শেয়ার দাম বেড়েছে ২০৪ শতাংশ। এর মাধ্যমে এক সময় ফেসভ্যালুর কাছাকাছি আটকে থাকা কোম্পানিটির শেয়ার দাম অর্ধশত টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, গেল সপ্তাহে এক শ্রেণির বিনিয়োগকারীর কাছে অগ্রণী ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার বেশ আকর্ষণীয় হয়ে উঠে। ফলে দফায় দফায় দাম বেড়ে গেল সপ্তাহে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) দাম বাড়ার শীর্ষ দশটি দখল করেছে এই কোম্পানিটি
প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারের এই দাম বাড়াকে অস্বাভাবিক বলছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ কর্তৃপক্ষ। এ জন্য বিনিয়োগকারীদের সতর্ক করে ২০ এপ্রিল ডিএসই থেকে জানানো হয়, অগ্রণী ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দাম অস্বাভাবিক হারে বাড়ার কারণে কোম্পানিটিকে নোটিশ করা হয়। জবাবে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে- সম্প্রতি শেয়ারের যে অস্বাভাবিক দাম বেড়েছে, তার জন্য কোনো অপ্রকাশিত মূল্য সংবেদনশীল তথ্য নেই।
ডিএসইর এই সতর্ক বার্তার পরও এক শ্রেণির ক্রেতাদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসায় গত সপ্তাহের পাঁচ কার্যদিবসেই কোম্পানিটির শেয়ার দাম বেড়েছে। এতে সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ার দাম বেড়েছে ২৯ দশমিক ৫৪ শতাংশ। টাকার অঙ্কে বেড়েছে ১২ টাকা ২০ পয়সা। সপ্তাহ শেষে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম দাঁড়িয়েছে ৫৩ টাকা ৫০ পয়সা, যা আগের সপ্তাহের শেষে ছিল ৪১ টাকা ৩০ পয়সা।
গেলে সপ্তাহে কোম্পানিটির শেয়ার দামে এমন উল্লম্ফন হলেও গত বছরের জুলাইতে কোম্পানিটির শেয়ার দাম ফ্লোর প্রাইস বা ১৭ টাকা ৬০ পয়সায় আটকে ছিল। জুলাই মাসের শুরু থেকে কোম্পানিটির শেয়ার দাম বাড়তে থাকে। এরপর বেশ কয়েকবার কোম্পানিটির শেয়ার দামে বেশ উত্থান-পতন হয়। তবে ৪ এপ্রিল থেকে কোম্পানিটির শেয়ার দাম টানা বাড়ছে।
শেয়ারের এমন দাম বাড়লেও ২০০৫ সালে তালিকাভুক্ত হওয়া এই কোম্পানিটি কখনও ১০ শতাংশের ওপরে লভ্যাংশ দিতে পারেনি। সর্বশেষে ২০২০ সালে কোম্পানিটি বিনিয়োগকরীদের ৫ শতাংশ নগদ ও ৫ শতাংশ বোনাস শেয়ার লভ্যাংশ দিয়েছে। তার আগে ২০১৯ সালে প্রতিষ্ঠানটি থেকে বিনিয়োগকারীরা ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ পায়। আর ২০১৮ সালে লভ্যাংশ হিসেবে ৫ শতাংশ বোনাস শেয়ার দিয়েছিল কোম্পানিটি।
এদিকে গত সপ্তাহে শেয়ারের দামে উল্লম্ফন হওয়ায় এক শ্রেণির বিনিয়োগকারী অগ্রণী ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার বিক্রি করে দিয়েছেন। এতে সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৫৫ কোটি ১৬ লাখ ৯৭ হাজার টাকা। আর প্রতি কার্যদিবসে গড়ে লেনদেন হয়েছে ১১ কোটি ৩ লাখ ৩৯ হাজার টাকা।
দাম বাড়ার শীর্ষ তালিকায় অগ্রণী ইন্স্যুরেন্সের পরে রয়েছে শাহিনপুকুর সিরামিক। গেল সপ্তাহে এই কোম্পানিটির শেয়ার দাম বেড়েছে ২৭ দশমিক ৯৬ শতাংশ। ২৬ দশমিক ৮৪ শতাংশ দাম বাড়ার মাধ্যমে পরের স্থানটিতে রয়েছে হাইডেল বার্গ সিমেন্ট।
এছাড়া গত সপ্তাহে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহের শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় থাকা- ঢাকা ইন্স্যুরেন্সের ২৫ দশমিক ৫৫ শতাংশ, দেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের ২২ দশমিক ৭৫ শতাংশ, ইষ্টার্ণ ইন্স্যুরেন্সের ২০ দশমিক ৫২ শতাংশ, মাইডস ফাইন্যান্সের ২০ দশমিক ৪৭ শতাংশ, রংপুর ডেইরি অ্যান্ড ফুডের ১৮ দশমিক ৩০ শতাংশ, ইউনাইটেড ইন্স্যুরেন্সের ১৭ দশমিক ৮৭ শতাংশ এবং ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্সের ১৬ দশমিক ৪৮ শতাংশ দাম বেড়েছে।