হাই ব্লাড প্রেশার নিয়ন্ত্রণে রাখতে যে সকল খাবার নিয়ন্ত্রিত উপায় খাওয়া উচিত সেগুলো নিয়ে আলোচনা করব । এই পর্বে জানবো লবণ কিভাবে পরিহার করা যায়।
১। লবন: দিনে কতটুকু লবণ খাচ্ছেন তার উপরে সতর্ক নজর রাখতে হবে। দিনে পৌনে ১ চা-চামচের একটু কম লবণ খাবেন। এখন আপনি বলতে পারেন এটা তো খুবই সহজ। লবণদানি থেকে কেইবা পৌনে ১ চা-চামচ লবণ খায়! ভাতের সাথে লবণ নইলে ও তো কেউ এক চিমটে বেশি নেয় না। কিন্তু আসল বিষয়টা এমন নয়। আমরা দিনে কতটুকু লবণ খেয়ে থাকি, তা বেশিরভাগই খাবারের ভেতরে লুকিয়ে থাকে। বাসায় পাত্রের সাথে যে তরকারী খাই সেগুলো সবই লবণ দিয়ে রান্না করা। ফল খেতে গেল আমরা লবণ মিক্স করে খাই যেমন পেয়ারা, জাম্বুরা , আমরা ও কাঁচা আম ইত্যাদি। এছাড়াও সিংগারা, পুরি, ঝাল মুড়ি সবগুলোতেই লবণ দেওয়া। লবন দেয়া নাই এমন খাবারই বরং আমরা কম খাই। এজন্য এই দিনে কি পরিমাণ লবণ আমাদের শরীরে ঢুকে সেটা হিসাব আমাদের কাছে থাকে না। গবেষণায় দেখা গেছে বেশিরভাগ মানুষই নিজের অজান্তে মাত্রাতিরিক্ত লবণ খাচ্ছে। উচ্চ রক্তচাপের রোগী হিসেবে এটা আপনার জন্য অনেক বড় ঝুঁকি।
জেনে রাখুন কি কি উপায়ে লবণ খাওয়া কমান যায়:
১। ভাত খাওয়ার সময় আলাদা করে কাঁচা লবণ খাবেন না। টেবিল থেকে লবণের ফোটা সরিয়ে ফেলবেন, কারণ হাতের কাছে লবণ থাকলে খেতে ইচ্ছে করতে পারে।
২। অনেকের মধ্যে একটা ধারণা আছে কাঁচা লবণ হাই প্রেসার এর জন্য ক্ষতিকর বাট ভাজা লবণ ক্ষতি করে না। এটা একটা সম্পূর্ণ ভুল ধারণা, লবণ কাঁচা হোক আর ভাজা হোক তাতে সোডিয়াম থাকে আর সোডিয়াম ব্লাড প্রেসার বাড়ায়। তাই তরকারিতে লবন কম দিতে হবে।
৩। রান্না করার উপাদান গুলো তে কতটুকু লবণ আছে সেটা খেয়াল করতে হবে। সয়াসস , বিট লবণ ও টেস্টিং সল্ট এর মধ্যে প্রচুর পরিমাণ লবণ থাকে। তাই রান্না এগুলোর পরিবর্তে অন্য কিছু ব্যবহার করার চেষ্টা করবেন।
৪। বাসায় রান্না করা খাবারে এবং কিছু প্রাকৃতিক খাবারে বেশি পরিমাণ লবণ থাকে, সেগুলো এড়িয়ে চলবেন বা খেলেও অল্প পরিমাণে খাওয়ার চেষ্টা করবেন। যেমন চিংড়ি মাছ, পনির, কিছু কিছু ভর্তা ও আচার ইত্যাদি।
৫। বাজার থেকে কিনা খাবার, টংয়ের দোকানের খাবার, হোটেল কিংবা রেস্টুরেন্টের খাবার এগুলো যত পারেন এড়িয়ে চলবেন। কেন? কারণ এগুলো তে কি পরিমাণ লবণ দেওয়া আছে সেটা আপনার জানা নাই। ব্লাড প্রেসারের রোগীদের জন্য কম লবণ দিয়ে অল্প স্বাদের খাবার রান্না করার মতো রেস্টুরেন্ট নেই বললেই চলে। তাই এগুলো পরিহার করার পরামর্শ দিচ্ছি।
৬। টমেটো সস এড়িয়ে চলবেন। এগুলোতে অনেক লবণ থাকে।
৭। নাস্তায় পুরি সিঙ্গারা চপ চিপস স্যান্ডউইচ এসব পরিহার করলে নিজের অনেক উপকার হবে। নাস্তায় একটা ফল খেতে পারেন। তবে ফল খেতে গিয়ে আবার কাঁচা লবণ খেতে যাবেন না।
৮। দাওয়াতে গেলে পোলাও পরিহার করে সাদা ভাত খাবেন। কারণ সাদাবাদ সাধারণত লবন ছাড়া রান্না করা হয়। নান রুটি না নিয়ে সাধারন রুটি খাবেন লবণ পরিহার করার জন্য।
আগামী পর্বে থাকছে বাকি টিপস... সাথেই থাকুন।
স্বাস্থ্যবিধি মেনে সুস্থ থাকবেন, ভালো থাকবেন। দ্য স্পেস ইনফিনিটির সাথে থাকুন।