নাইজেরিয়ার কিংসলি এখন বাংলাদেশের

 বাংলাদেশের ফুটবলে পরিচিত নাম এলিটা কিংসলি। ঢাকার ফুটবলে গোল করতে জুড়ি নেই নাইজেরিয়ান এই স্ট্রাইকারের। তবে কিংসলি এখন আর নাইজেরিয়ার নন, তিনি শুধুই বাংলাদেশের। বৈবাহিক সূত্রে কাল বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পেয়েছেন তিনি। এর আগে কিংসলিকে বাতিল করতে হয়েছে জন্মসূত্রে পাওয়া নাইজেরিয়ার নাগরিকত্ব। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কিংসলি নিজেই।

২০১১ সালে আরামবাগ ক্রীড়া সংঘের জার্সিতে বাংলাদেশ অধ্যায় শুরু কিংসলির। এরপর মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়াচক্র, বিজেএমসি হয়ে সর্বশেষ বাতিল হওয়া মৌসুমে আরামবাগের হয়েই খেলেন ৩১ বছর বয়সী স্ট্রাইকার। করোনার কারণে লিগ বাতিল হওয়ার আগে আরামবাগের মতো খর্বশক্তির দলে খেলেও ৫ ম্যাচে ৫ গোল করে তিনিই ছিলেন সর্বোচ্চ গোলদাতা।

চলতি মৌসুমে যে কিংসলিকে এখনো কোনো ক্লাবের জার্সিতে দেখা যায়নি, সেটি বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য দৌড়ঝাঁপের কারণেই। ২০১৫ সালে নাগরিকত্বের আবেদনের পর প্রয়োজনীয় যাচাই–বাছাই শেষে গত বছর তাঁকে শর্ত দেওয়া হয়, বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পেতে হলে আগে বাতিল করতে হবে নাইজেরিয়ার নাগরিকত্ব।

সপরিবার কিংসলি।
সপরিবার কিংসলি। 
ছবি: প্রথম আলো

সে প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতেই গত বছর দলবদলের আগে নাইজেরিয়ায় ফিরে যান তিনি। আশা ছিল, বাংলাদেশের নাগরিকত্ব নিয়ে স্থানীয় ফুটবলার হিসেবেই খেলবেন ঘরোয়া ফুটবলে। অবশেষে সে নাগরিকত্বের সনদ তিনি হাতে পেয়েছেন কাল।

সনদ পেয়ে খুশি কিংসলি বলছিলেন, ‘অবশেষে স্বপ্ন সত্যি হলো। আমি এখন আপনাদের মতোই বাংলাদেশের একজন মানুষ। বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য গত পাঁচ বছর অনেক কষ্ট করেছি। আমার স্ত্রী-সন্তানেরাও খুব খুশি। তাঁদের বাবা এখন বাংলাদেশের—সন্তানদের আনন্দ দেখে আরও বেশি ভালো লাগছে।’

এর আগে ২০১৯ সালের শেষ দিকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পেয়ে গত বছর জাতীয় দলে ডাক পান ফিনল্যান্ডপ্রবাসী তারিক রায়হান কাজী। কিংসলিরও বাংলাদেশ দলে খেলতে এখন আইনগত বাধা নেই।

২০১২ সালে বাংলাদেশের তরুণী লিজাকে বিয়ে করেন কিংসলি। বাংলাদেশেই যখন সংসার পাতা, চাইলেন বাংলাদেশের নাগরিক হয়েই এই দেশে থাকতে। প্রায় ছয় বছর আগের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে যাচাই–বাছাই শেষে কাল কিংসলির হাতে নাগরিকত্বের সনদ তুলে দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সনদে লেখা, ‘বৈবাহিক সূত্রে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব প্রাপ্তির বিষয়ে আপনার আবেদন অনুমোদিত হয়েছে। বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য আপনাকে অভিনন্দন।’

বাংলাদেশের নাগরিক হওয়ার পর কিংসলির চোখ এখন জাতীয় দলের লাল-সবুজ জার্সিতে, ‘এখন আমি বাংলাদেশ জাতীয় দলের হয়ে খেলার স্বপ্ন দেখছি। আসলে স্বপ্নটা আমি ২০১৫ সালে নাগরিকত্বের আবেদনের সময় থেকেই দেখছি। কোচ যদি আমার সর্বশেষ পারফরম্যান্স বিবেচনা করে ডাকেন, তাহলে আমি প্রস্তুত আছি। কোনো ক্লাবের হয়ে এবার না খেললেও অনুশীলনের মধ্যে আছি।’

কিংসলিকে যাঁরা চেনেন, তাঁদের তাঁর যোগ্যতা নিয়ে সন্দেহ থাকার কথা নয়। ঘরোয়া ফুটবলের বড় একটি ক্লাব তো মধ্যবর্তী দলবদলে কিংসলিকে দলে নেওয়ার সব প্রস্তুতিই নিয়ে রেখেছে।

এর আগে ২০১৯ সালের শেষ দিকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পেয়ে গত বছর জাতীয় দলে ডাক পান ফিনল্যান্ডপ্রবাসী তারিক রায়হান কাজী। কিংসলিরও বাংলাদেশ দলে খেলতে এখন আইনগত বাধা নেই। ফিফার আইন অনুযায়ী অন্য কোনো জাতীয় দলে না খেলা ফুটবলার কোনো দেশে পাঁচ বছর থাকার পর নাগরিকত্ব পেলে সে দেশের জাতীয় দলে খেলতে পারবেন।

Post a Comment

Previous Post Next Post