ডিজেলের দাম বৃদ্ধি: সরকার আর কত ভর্তুকি দেবে, প্রশ্ন প্রধানমন্ত্রীর

 


জ্বালানি তেল ডিজেল ও কেরোসিনের দাম বৃদ্ধি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ডিজেলের দাম পাশের দেশেও বেড়েছে। সরকার আর কত ভর্তুকি দেবে। 


প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে বুধবার বিকাল ৪টায় সংবাদ সম্মেলনে দেশে সম্প্রতি জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির পর বিভিন্ন খাতে এর প্রভাব নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি পাল্টা এ প্রশ্ন রাখেন।


প্রধানমন্ত্রী বলেন, তেল-বিদ্যুৎ-সারসহ বিভিন্ন খাত মিলিয়ে সরকারকে প্রতি বছর ৫৩ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হয়। সরকার আর কত টাকা ভর্তুকি দেবে?


তিনি আরও বলেন, বাজেটের সব টাকা যদি ভর্তুকিতে দিয়ে দেই তাহলে সব উন্নয়ন প্রকল্প বন্ধ হয়ে যাবে।


এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা করোনাকালে সবাইকে বারবার সহায়তা দিয়েছি। কলকারখানা, ব্যবসা-বাণিজ্য যাতে সচল থাকে তার ব্যবস্থা নিয়েছি। বিভিন্ন সেক্টরে প্রণোদনা দিয়েছি। মূল্যস্ফীতি কমাতে ব্যবস্থা নিয়েছি। সবই তো করছি। কিন্তু তেল তো আমাদের কিনে আনতে হয়। সেই কেনা তেলে আবার ভর্তুকি দিয়ে জনগণকে দিতে হয়।


ট্যাক্স দেওয়া নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশে তো মানুষ ভালোভাবে খাচ্ছে, চলছে। কিন্তু প্রকৃত ট্যাক্স দিচ্ছে কয়জন?


গত ৪ নভেম্বর থেকে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারে ১৫ টাকা বাড়িয়ে ৬০ থেকে ৮০ টাকা করেছে সরকার। এরপর গণপরিবহণের আন্দোলনের মুখে ভাড়াও বাড়ানো হয়। এতে সাধারণ মানুষের জীবনযাপনে মারাত্মক প্রভাব পড়েছে। 


ডিজেলের দাম বাড়ানোর বিষয়ে সরকারের জ্বালানি মন্ত্রণালয় ব্যাখ্যাও দিয়েছে। যদিও ওই সময় প্রধানমন্ত্রী কপ-২৬ সম্মেলনে থাকায় তার কোনো বক্তব্য আসেনি। আজ সফরপরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকরা এ বিষয়ে প্রশ্ন করেন। 


বাস ও অন্যান্য পরিবহণের ভাড়া নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি দেশে ছিলাম না ঠিক, তবে দেশের সঙ্গে ছিলাম না তা তো নয়। ডিজিটাল যুগ। বিভিন্ন মাধ্যমে বারবার যোগাযোগ হয়েছে। যারা ভাড়া বাড়াচ্ছিল তাদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। এরপর একটি যৌক্তিক পর্যায়ে ভাড়া রাখা হয়েছে।


কপ-২৬ সম্মেলন এবং যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স সফর নিয়ে অবহিত করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই সংবাদ সম্মেলনে আসেন। সম্মেলনের শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সফরের ওপর সাধারণ আলোচনা করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সে তার সদ্যসমাপ্ত সফর সম্পর্কে গণমাধ্যমকে অবহিত করেন।


প্রধানমন্ত্রী ৩১ অক্টোবর থেকে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত গ্লাসগো, লন্ডন ও প্যারিসে সরকারি সফরকালে কপ-২৬ এ বিশ্বনেতাদের শীর্ষ সম্মেলন, বাংলাদেশ বিনিয়োগ শীর্ষ সম্মেলন ২০২১, ইউনেস্কো সদরদপ্তরে সৃজনশীল অর্থনীতির জন্য ইউনেস্কো-বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আন্তর্জাতিক পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান, ইউনেস্কোর ৪১তম সাধারণ সম্মেলন, প্যারিস শান্তি ফোরাম, ইউনেস্কোর ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী এবং অন্যান্য উচ্চপর্যায়ের অনুষ্ঠানে যোগ দেন।

Post a Comment

Previous Post Next Post