রাজধানীর মিরপুরে হঠাৎ করেই ধর্মঘট শুরু করেছেন পরিবহণ শ্রমিকরা।মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় মিরপুর-১২ নম্বর চন্দ্রবিন্দু মোড়ে কয়েকশ শ্রমিক জড়ো হয়ে বাস থামিয়ে যাত্রীদের নামিয়ে দিচ্ছেন। এতে দুর্ভোগে পড়ছেন শত শত যাত্রী।
শ্রমিকদের এ আন্দোলনের খবর ছড়িয়ে পড়লে মিরপুরের কালশী, পূরবী, মিরপুর-১০ ও ১১ নম্বর এলাকায় পরিবহণ শ্রমিকরা ধর্মঘট শুরু করেন। তারাও বাস থামিয়ে যাত্রীদের নামিয়ে দিচ্ছেন এবং আন্দোলনে যোগ দিচ্ছেন।
সরেজমিনে রাত সাড়ে ৭টার দিকে মিরপুর ঘুরে দেখা যায়, মিরপুর-১২ নম্বর, কালশী ও সিরামিক রোডে শ্রমিকরা জড়ো হয়ে মূল সড়কে অবস্থান নিয়েছেন। তারা মোড়ে মোড়ে পাহারা দিচ্ছেন। যাতে কোনো বাস মিরপুর-১২ নম্বর থেকে ছেড়ে যেতে না পারে। মিরপুর-১২ নম্বর থেকে সব রুটের বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। উত্তরা, বাড্ডা, রামপুরা থেকে কোনো যাত্রীবাহী বাস ইউসিবি চত্বর দিয়ে মিরপুর-১২ নম্বরে প্রবেশ করলেই তা আটকে দিচ্ছেন পরিবহণ শ্রমিকরা। রাত ৮টার দিকে মিরপুর-১২ নম্বর, কালশী, পূরবী এলাকায় দেখা যায় শত শত যাত্রী রাস্তায় দাঁড়িয়ে রয়েছেন।
ঢাকা ইলেক্ট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেডের (ডেসকো) অফিস সহকারী লিজা আক্তার বলেন, অফিস শেষ করে উত্তরা থেকে মিরপুর-১২ নম্বর পর্যন্ত একটু আগে পৌঁছলাম। ১২ নম্বর পূরবীর সামনে এসে দেখি যাত্রীদের নামিয়ে দিচ্ছে পরিবহণ শ্রমিকরা। আমি মিরপুর-১ নম্বর যাব। কোথাও পরিবহণ ধর্মঘট নেই। মিরপুর-১২ নম্বর এসে দেখি সব বাস বন্ধ। রিকশা যেতে চাইলেও ভাড়া বেশি।
এমবিএম গার্মেন্টসের পারচেজ অফিসার আমিন বলেন, উত্তরা থেকে বাসে উঠেছি মোহাম্মদপুর যাওয়ার উদ্দেশ্যে। কালশী পর্যন্ত এসে দেখি বাস থেকে যাত্রীদের নামিয়ে দিচ্ছে শ্রমিকরা। সঙ্গে যে মালপত্র রয়েছে- তা সিএনজি দিয়ে নিয়ে গেলেও অনেক টাকা ভাড়া।
আন্দোলনকারী শ্রমিকরা জানান, নতুন ভাড়া নির্ধারণের পর যাত্রীদের কাছ থেকে সে পরিমাণ ভাড়া তারা আদায় করতে পারছেন না। অনেক সময় বাকবিতণ্ডা হয়। বাস মালিকরাও ভাড়া কম নিতে চান না। শ্রমিকদের পকেট থেকে হলেও বাস মালিকদের ভাড়া সম্পূর্ণ পরিশোধ করতে হয়।
তবে যাত্রীদের অভিযোগ, সরকার নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে বেশি নিচ্ছে বাস শ্রমিকরা। নিজেদের ইচ্ছামতো ভাড়া চাচ্ছে। গণপরিবহণে সিটিং সার্ভিস তুলে দেওয়া হলেও তারা সিটিং বলে ভাড়া বেশি নিচ্ছে। অতিরিক্ত ভাড়া না দিতে চাইলে গাড়ি থেকে নামিয়ে দিচ্ছে।
মিরপুর-১২ নম্বরের ট্রাফিক পুলিশের টিআই সোহেল বলেন, মিরপুর-১২ নম্বর থেকে সব বাস চলাচল বন্ধ। এখান থেকেই সব রুটের বাস ছাড়ে। পরিবহণ শ্রমিকরা দুপুর থেকেই ধর্মঘট শুরু করেছেন। সিরামিক রোড, কালশী ও পূরবী এলাকায় শত শত বাস পড়ে রয়েছে। শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের অনেক দাবি-দাওয়া। সড়কে যাতে বিশৃঙ্খলা না হয় সে দিকেই নজর রাখছি।
ট্রাফিক পুলিশের পল্লবী জোনের টিআই ইলিয়াস হোসেন বলেন, শ্রমিকদের আন্দোলন মূলত শুরু হয়েছে মিরপুর-১২ নম্বর থেকে। মিরপুর-১০ নম্বর পর্যন্ত বাস চললেও ওই এলাকায় বন্ধ। তিনি বলেন, একটু আগে শুনেছি (রাত ৮টায়) পূরবী এলাকায় শ্রমিকরা জড়ো হয়ে বসে রয়েছেন। হঠাৎ করেই শ্রমিকরা ধর্মঘট ডেকেছেন। আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি।
পল্লবী থানার ওসি পারভেজ ইসলাম বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। শ্রমিকদের রাস্তা থেকে সরে যেতে বলা হয়েছে। তাদের সঙ্গে আলোচনা চলছে।