৩ এতিম শিশুকে পেটানোর ভিডিও ভাইরাল: গ্রেফতার শিক্ষক কারাগারে

 


সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলায় তিন এতিম শিশুকে পেটানোর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরালের পর গ্রেফতার সেই মাদ্রাসাশিক্ষককে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।


বৃহস্পতিবার সকালে ছাতক থানা থেকে শিক্ষক মাওলানা আব্দুল মুকিতকে সুনামগঞ্জ আদালতে পাঠানো হয়েছে। আদালত তাকে  জেলহাজতে পাঠানোর আদেন দেন।


এর আগে বুধবার সকালে উপজেলার গোবিন্দগঞ্জ ট্রাফিক পয়েন্ট এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। 


গ্রেফতার মাওলানা আবদুল মুকিত উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের রহমতপুর গ্রামের আবদুল গণির ছেলে।


এ ঘটনায় থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই হাবিবুর রহমান পিপিএম বাদী হয়ে মাদ্রাসা শিক্ষক আব্দুল মুকিতের বিরুদ্ধে থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে বৃহস্পতিবার সকালে তাকে সুনামগঞ্জ আদালতে পাঠানো হয়েছে।


উপজেলার কালারুকা ইউনিয়নের রামপুর গ্রামে অবস্থিত হাজী ইউসুফ আলী এতিমখানা হাফিজিয়া দাখিল মাদরাসার গত বছরের ২০ ডিসেম্বর রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় মাদরাসা কক্ষে প্রস্রাব করে হিফজ শাখার ছাত্র আবু তাহের (৯), রবিউল ইসলাম নিলয় (১০) ও কাজী শফিউর রহমান সাফি (১১) নামের এ তিন এতিম শিশু। পর দিন সকালে বিছানায় প্রস্রাব করার অপরাধে অফিস কক্ষে ডেকে নিয়ে তাদের স্টিলের স্কেল দিয়ে বেধড়ক পেটান মাদ্রাসার সুপার মাওলানা আবদুল মুকিত। 


এ সময় সহকারী শিক্ষক জুবায়ের আহমদ সানি, মোহাম্মদ আবু বক্কর, হাফেজ মিসবাহ উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।


নির্যাতনের ভিডিও মোবাইলে ধারণ করেন হাফেজ বিভাগের শিক্ষক হাফেজ মিসবাহ উদ্দিন। উপস্থিত শিক্ষকরা শিশুদের মারধরে কোনো বাধা প্রদান করেননি সুপারকে। ঘটনাটি এখানেই থেমে যায়। কিন্তু ঘটনার ভিডিও রেকর্ড করে রাখা হয়। 


গত ৫ নভেম্বর সায়মন আনোয়ার নামের এক ফেসবুক আইডিতে দুই মিনিট ৬ সেকেন্ডের একটি ভিডিওটি আপলোড করা হয়। একই সঙ্গে এতিম শিশুদের এমন নির্যাতনের হাত থেকে রক্ষা করার একটি পোস্ট দেন তিনি। ওই আপলোডকৃত ভিডিও মুহূর্তের মধ্যে ফেসবুকে ভাইরাল হলে বিষয়টি প্রশাসনের নজরে আসে। এ ঘটনা নিয়ে দেশ-বিদেশে আলোচনা-সমালোচনাসহ নিন্দার ঝড় ওঠে। ভিডিওটি দেখে কালারুকা ইউপির রামপুর গ্রামের মানুষ ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। 


এ বিষয়টি নিয়ে প্রিন্ট ও ইলেক্টনিক্স মিডিয়ায় ব্যাপক প্রচার হয়। তৎপর হয়ে ওঠে পুলিশ প্রশাসনও।


প্রচারিত ভিডিওতে দেখা যায়, সুপার মুকিত তার অফিস কক্ষে তিন এতিম শিশুকে লাইনে দাঁড় করে রাখেন। এক এক করে পর্যায়ক্রমে স্টিলের স্কেল দিয়ে তাদের বেধড়ক পেটান। মারপিট সহ্য করতে না পেরে শিশুরা চিৎকার দিয়ে কান্না-কাটি করে বলতে থাকে ‘আর জীবনে ইতা করতামনায় হুজুর, আপনার পায়ে ধরি’। কিন্তু শিক্ষকের পায়ে ধরেও তারা রক্ষা পায়নি।


এ ব্যাপারে থানার ওসি (ভারপ্রাপ্ত) মিজানুর রহমান বলেন, আসামিকে আদালতে চালান দেওয়াহয়েছে।

Post a Comment

Previous Post Next Post