কখন বুঝবেন গেম্বলিং আইটেম থেকে বেরুতে হবে

 




পুঁজিবাজারের সিংহভাগ বিনিয়োগকারীরাই সর্ট টার্মে লাভবান হতে চান। এখানে দীর্ঘ মেয়াদে বিনিয়োগ খুব একটা করতে চান না। তারা দ্রুত ক্যাপিটাল গেইন করতে চায়। যে কারণে এখানে শেয়ার নিয়ে গেম্বলিং হয় বেশি। আর তাতে ঝুঁকিতে পড়েন বিনিয়োগকারীরা। কিন্তু গেম্বলিং শেয়ার থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় বুঝতে না পারার কারণে লোকসানের কবলে পড়েন তারা। যে কারণে গেম্বলিং আইটেম থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময়টা বুঝতে পারাটা জরুরী।



বাজার বিশ্লেষকদের অভিযোগ, এদেশের বিনিয়োগকারীরা মূলত অধৈর্য্যশীল। তারা দ্রুত ক্যাপিটাল গেইন করতে চায়। যে কারণে এখানে শেয়ার নিয়ে গেম্বলিং হয় বেশি। আর তাতে ঝুঁকিতে পড়েন বিনিয়োগকারীরা। কিন্তু গেম্বলিং শেয়ার থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় বুঝতে না পারার কারণে লোকসানের কবলে পড়েন তারা। যে কারণে গেম্বলিং আইটেম থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময়টা বুঝতে পারাটা তাদের জন্য জরুরী।


যে শেয়ারটি নিয়ে গেম্বলিং করবেন, গেম্বলাররা সেই শেয়ারটি কম দরে চুপেচাপে কিনেন। তারপর হঠাৎ শেয়ারটি দর বাড়াতে থাকে। তখন বাজারে ওই শেয়ারের দর নিয়ে নানা গুজব ছড়ান। শেয়ারটি দৌঁড় কতো, কত পর্যন্ত যাবে, তা ছড়ানো হয়। এই সময় গেম্বলাররা কেনার চেয়ে সেল প্রেসারে থাকেন। আর সাধারণ বিনিয়োগকারীরা কেনায় নামেন।


তারপর শুরু হয় আসল খেলা। গেম্বলাররা কোম্পানির সঙ্গে যোগসাজোশ করে মূল্য সংবেদনশীল তথ্য (পিএসই) প্রকাশ করেন। এতে কোম্পানির বিভিন্ন ধরনের ইতিবাচক খবর প্রকাশ করা হয়। এর মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদেরকে আরও আকৃষ্ট হয়। কিন্তু ওই ইতিবাচক খবর আসলে ইতিবাচক না, ওগুলো সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য তৈরী ফাদঁ।


ঠিক এই সময় শেয়ারটির দর যখন আকাশচুম্বী, তখন গেম্বলাররা বেরিয়ে যেতে শুরু করেন। তারা পিএসআই প্রকাশের মাধ্যমে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগে আনতে থাকে এবং নিজেরা বের হয়ে যেতে থাকে।


যা গত বছরের শেষ দিকে বীমা কোম্পানিগুলোর শেয়ারেও দেখা গেছে। ওই সময় শেয়ার দর আকাশচুম্বি করার পরে বিভিন্নভাবে বীমা খাত নিয়ে ইতিবাচক খবর আসতে থাকে। এজেন্টদের কমিশন, পরিশোধিত মূলধন, এই খাত ভালো করবে, মুনাফা বৃদ্ধি ইত্যাদি ইতিবাচক খবর প্রকাশ করা হয়। এসব প্রক্রিয়ার সঙ্গে রাঘব বোয়াল অনেকেই জড়িত ছিল।


কিন্তু ওই ধাক্কায় গেম্বলাররা সুবিধা করতে পারেননি। ইতিবাচক খবর আশার সঙ্গে সঙ্গে সাধারণ বিনিয়োগকারীরাও বেরিয়ে যেতে শুরু করেন। ওই ক্ষেত্রে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দেয়। এতে করে আটকে যায় গেম্বলাররা। যে কারণে বীমার শেয়ারে চলছে এখনো তেজিভাব। তবে এটাও ঠিক, বীমা খাতে নানা পদক্ষেপ নেয়ার কারণে করোনার মধ্যেও খাতটিতে আয়ে ও ডিভিডেন্ডে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সে কারণে বীমা খাতের শেয়ার আরও সামনে যাওয়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে।


তবে সবকিছুরই শেষ আছে। সে রকম সব শেয়ারেরও দর বৃদ্ধির পর সংশোধন অনিবার্য হয়ে যায়। সম্প্রতি বস্ত্র খাতে শেয়ার ও ব্যাংক খাতের শেয়ারেও তেজিভাব দেখা দিয়েছে। এটি অবশ্যই পুঁজিবাজারের জন্য ইতিবাচক দিক। দীর্ঘদিন ঘুমিয়ে থাকা খাত দুটির শেয়ারে তেজিভাব দেখা দিয়েছে। কিন্তু সেই দৌঁড় কতটা হবে-তা বিনিয়োগকারীদের বুঝতে হবে। কোন শেয়ারের দৌঁড় যখন ধারাবাহিকভাবে অস্বাভাবিক হয়, তখন বিনিয়োগকারীদের বুঝতে হবে এখন বের হওয়ার সময়, ঢোকার সময় নয়।

Post a Comment

Previous Post Next Post