২০ লাখ টাকার নিচে ডাকাতি করেন না তাঁরা



সহজে লুট ও বিক্রির সুবিধার্থে তাঁদের পছন্দ সিগারেট। তবে তাঁরা ২০ লাখ টাকার মূল্যমানের নিচে মালামাল লুট করেন না। লুটের সময় সঙ্গে রাখেন অস্ত্র ও রশি। বাধা পেলে গুলি ছুড়তে এমনকি খুন করতে দ্বিধা করেন না। আন্তজেলা ডাকাতদলের প্রধান নুর নবীকে (৩০) গ্রেপ্তারের পর পুলিশ এসব তথ্য জানতে পারে।


নুর নবী নোয়াখালীর হাতিয়া থানার পশ্চিম বড়ডেল গ্রামের ছেলে। এলাকায় সবাই তাঁকে চেনেন সমাজসেবক হিসেবে। ডাকাতির টাকায় এলাকায় দান-খয়রাতও করেন। গরু চুরির মাধ্যমে নুর নবীর এ পথে যাত্রা শুরু হয়।


নুর নবীর সঙ্গে গ্রেপ্তার করা হয় ডাকাতির মালামাল ক্রয় করা কুমিল্লা সদরের পশ্চিম বাগিচাগাঁও এলাকার মো. শাহজাহান (৬০) এবং তাঁর ছেলে মো. এনায়েত উল্লাহকে।


গতকাল রোববার রাতে সীতাকুণ্ড থানার বাড়বকুণ্ড এলাকা থেকে মো. নুর নবীকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে শাহজাহান ও তাঁর ছেলেকে কুমিল্লা সদর থানার বাগিচাগাঁও এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের কাছ থেকে লুট করা ৯২ কার্টন সিগারেট এবং দুই কার্টন বিক্রির ৬৮ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।


২৭ মে নগরের ডবলমুরিং থানার পোস্তারপাড় এলাকায় আবুল খায়ের গ্রুপের ডিলার খাজা ট্রেডার্সের গুদামে ডাকাতি হয়। সেখান থেকে ৩২ লাখ টাকার সিগারেট নিয়ে যায় ডাকাতেরা। এই ঘটনায় ডবলমুরিং থানায় মামলা হয়। এই মামলার তদন্ত করতে গিয়ে ডবলমুরিং থানা-পুলিশ ও নগর গোয়েন্দা পুলিশের যৌথ অভিযানে আন্তজেলা এই ডাকাতদলের সন্ধান মেলে।


নগর পুলিশের উপকমিশনার (পশ্চিম) মো. আবদুল ওয়ারিশ আজ সোমবার দুপুরে ডবলমুরিং থানা কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ডাকাতদলে ২০ থেকে ২৫ জন সদস্য রয়েছেন। তাঁদের প্রধান গ্রেপ্তার নুর নবী। দলের বাকি সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। ডবলমুরিং থানা পোস্তারপাড় এলাকায় ডাকাতির ঘটনার কয়েক দিন আগে রেকি করে যান।


জিজ্ঞাসাবাদে নুর নবী পুলিশকে জানিয়েছেন, তাঁরা শুধু সিগারেট ডাকাতি করেন। সিগারেট সব এক জায়গাতেই মজুত থাকে, আবার এগুলো খুব সহজেই বিক্রি করা যায়। সাধারণত তাঁরা ২০ লাখ টাকার মালামাল টার্গেট (লক্ষ্য) করেন। এর কম করলে তাঁদের পোষায় না। গত ৭ বছরে ১০ জেলায় ৩০টি ঘটনায় ১০ কোটি টাকার সিগারেট লুট করেছেন। চলতি বছর লুট করেছেন কোটি টাকার বেশি সিগারেট।


ডবলমুরিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন বলেন, চক্রটি ডাকাতিতে বাধা দিলে গুলি ছোড়ে। ছুরিকাঘাত করে। খুনও করে। এই পর্যন্ত ডাকাতি করতে গিয়ে বাধা পেয়ে দুজনকে খুন করার কথা স্বীকার করেছেন নুর নবী। তিনি নিজ এলাকায় সংগঠক ও সমাজসেবক হিসেবে পরিচিত। বিয়ে করেছেন তিনটি। এখন সিগারেট ডাকাতি করলেও গরু চুরির মাধ্যমে তাঁর এ পথে যাত্রা শুরু।

Post a Comment

Previous Post Next Post