কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার ভারেল্লা গ্রামে মাদ্রাসার সেপটিক ট্যাংকি থেকে লাশ উদ্ধারের ঘটনায় গ্রেফতারকৃত দুই আসামি হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে।
তারা আদালতে জানায়, পূর্ববিরোধের জের ধরে মাদ্রাসার একটি কক্ষে শিশুটিকে হত্যা করে লাশ সেপটিক ট্যাংকে ফেলে দেয়।
রোববার দুপুরে কুমিল্লা জ্যেষ্ঠ আমলি-২ আদালতের বিচারক ফারহানা সুলতানার আদালতে আসামিদের হাজির করলে হত্যার ঘটনা বর্ণনা দিয়ে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়। পরে তাদের কুমিল্লা জেলহাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন বিচারক।
এর আগে গত শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় বুড়িচং উপজেলার ভারেল্লা শাহ ইসরাফিল কামিল মাদ্রাসার সেপটিক ট্যাংকি থেকে শিশু মীমের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। লাশ উদ্ধারের পরপরই পুলিশ অভিযান চালিয়ে মাদ্রাসার দপ্তরি একই এলাকার আবদুল মবিনের ছেলে মো. কাইয়ূম (১৬) ও পার্শ্ববর্তী উচ্চ বিদ্যায়ের ঝাড়ুদার ময়নাল হোসেনকে (৩২) আটক করে।
দেবপুর পুলিশ ফাঁড়ির এসআই কামাল হোসেন জানান, আদালতে গ্রেফতারকৃত আসামিরা জানান- ভারেল্লা শাহ ইসরাফিল কামিল মাদ্রাসার দপ্তরি কাইয়ূমের সঙ্গে নিহত শিশুটির পরিবারের পূর্ববিরোধ ছিল। ওই বিরোধকে কেন্দ্র করে কাইয়ূম ঝাড়ুদার ময়নাল হোসেনকে সঙ্গে নিয়ে মাদ্রাসার একটি কক্ষে শিশুটিকে হত্যা করে লাশ সেপটিক ট্যাংকে ফেলে দেয়।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার বাড়ির অদূরে মোবাইল কার্ডের জন্য বাজারে গিয়ে নিখোঁজ হয় ওই এলাকার শরীফ উদ্দিনের মেয়ে মীম আক্তার (৭)। পরদিন শিশুটির চাচা মো. বশির বুড়িচং থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করেন।
শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় ভারেল্লা শাহ ইসরাফিল কামিল মাদ্রাসার দপ্তরি মো. কাইয়ুম মাদ্রাসার সেপটিক ট্যাংক থেকে শিশুটির বস্তাবন্দি লাশ তোলে। পরে স্থানীয় লোকজন পুলিশকে খবর দিলে বুড়িচং থানা ও দেবপুর ফাঁড়ির পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। পুলিশ এ সময় কাইয়ূমকে আটক করে।
শনিবার রাতে শিশুটির মা পারভিন আক্তার বাদী হয়ে বুড়িচং থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে।
দেবপুর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক আবদুল্লা আল মামুন জানান, শিশুটিকে হত্যার পূর্বে ধর্ষণ করা হয়েছে কিনা তা নির্ণয়ের জন্য আলামত ও ডিএনএ সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য সিআইডির ফরেনসিক ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। ইতোমধ্যে দুই আসামি হত্যার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে। ঘটনার সঙ্গে অন্য কেউ জড়িত আছে কিনা পুলিশ তা খতিয়ে দেখছে।