বিজেপি ঠেকাতে ঝগড়াটে মহিলাদের এজেন্ট করার হুমকি মমতার

 

তৃতীয় দফা ভোটের আগে সোমবার ফের ম্যারাথন প্রচারে নেমেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ও ক্ষমতাসীন তৃণমূলের প্রধান মমতা ব্যানার্জি।


একইদিনে হুগলির চুঁচুড়া, চীণ্ডতলা, উত্তরপাড়া ও ভাঙড়ে সভা করেন তিনি। প্রথম সভা চুচুড়া থেকে এদিন ফের একবার বিজেপিতে তোপ দাগেন মমতা।


বলেন, দ্বিতীয় দফার ভোটে বিজেপির ভয়ে নন্দীগ্রামে অনেক বুথে এজেন্ট দিতে পারেনি তৃণমূল। কিন্তু এবার আর তা হবে না।


‘কোনো পরিস্থিতিতে বুথ ছেড়ে পালান যাবে না। বিজেপি বা তাদের মিলিটারি ভয় দেখাচ্ছে, সন্ত্রাস করছে, এই সব বলে বুথ ছেড়ে পালানোর কোনো বাহানা চলবে না। অন্যরা না বসলে আমরা আমাদের কন্যাশ্রীদের বসাব। যারা বঙ্গজননী করেন, তাদের এজেন্ট করা হবে। সে রকম হলে দলের ঝগড়াটে মহিলাদের সব বুথে এজেন্ট করে দেব। দেখি বিজেপির সাহস কত!’ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।


হুগলির চুঁচুড়া থেকেই এদিন ফের দিল্লি দখলের হুঙ্কার ছাড়েন মমতা। নিজেকে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার দাবি করে মমতার দাবি, ‘আগামী দিন খেলার মাঠে খেলতে হবে। বিজেপিকে মাঠ খালি করতে হবে। জোড়াফুলে ভোট দিতে হবে। দাঙ্গা করে পদ্মফুলটাকে নষ্ট করে দিয়েছে।


ওরা দাঙ্গা করলে আমাদের পাঙ্গা নিতে হবে। ইলেকশনের আগে আমার পা-টা চোট করে দিল। যাতে আমি বেরোতে না পারি। তাতে কী, মা-বোনেদের দুটো পা দিয়ে আমি যা করার করব। আমি ওই একটা পায়ে যা করে বেড়াচ্ছি না, একটা পায়েই বাংলা জয় করবে, আর দুটো পায়ে তো আগামী দিনে দিল্লি জয়ও করতে হবে।


তার দাবি, ‘গুজরাটিরা বাংলার শাসন করবে না, বাঙালিরাই করবে। কেন আট দফায় নির্বাচন? ২ দফাতেই নির্বাচন হয়ে যায়। কী চায় বিজেপি? চালাকি চলবে না। কোভিড হয়েছে বলে বিজেপি বন্ধ করতে চাইবে। কিন্তু এই চালাকি চলবে না।


নির্বাচন যখন হচ্ছে, তখন তা নির্ধারিত সূচি মেনেই শেষ করতে হবে। পাশাপাশি রাজ্যে বিনা মূল্যে টিকাকরণের জন্য কেন্দ্রের কাছে আবেদন করেও সুরাহা মেলেনি বলে ফের তোপ দাগেন মুখ্যমন্ত্রী। তার কথায়, ‘তোমরা চাও, মানুষ মারা যাক। আমারই তো রাজ্যের সবাইকে বিনা মূল্যে টিকা দেব বলে বারবার চিঠি দিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে জানিয়েছিলাম। তার জন্য যত টাকা লাগে, তা দিয়ে কেন্দ্রের থেকে কিনে নেব। কিন্তু তোমরা তো দিচ্ছই না।


তৃতীয় দফার ভোটে আরও সতর্ক নির্বাচন কমিশন : আজ তৃতীয় দফার নির্বাচন। মোট ৩১ আসনে ভোট। এর মধ্যে রয়েছে হাওড়ার ৭টি, দক্ষিণ ২৪ পরগনার ১৬টি এবং হুগলির ৮টি আসন। প্রথম দফার নির্বাচনের থেকে দ্বিতীয় দফার ভোটে অনেক বেশি অভিযোগ।


এমনকি বিজেপির বিরুদ্ধে বুথ জ্যাম, ভয় দেখানোর অভিযোগ তুলেছিল শাসকদল। প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছিল নির্বাচন কমিশনকেও। এই অবস্থায় তৃতীয় দফা নির্বাচনের আগে আরও সতর্ক কমিশন। থাকছে ব্যাপক কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা। অশান্তি এড়াতে এবার মোট ৮৩২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করছে কমিশন।


তার মধ্যে ৬১৮ কোম্পানি থাকবে বুথের নজরদারিতে। বাকি বাহিনীকে এরিয়া ডোমিনেশনের কাজে ব্যবহার করা হবে। নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা যাচ্ছে, অশান্তি এড়াতে শুধু দক্ষিণ ২৪ পরগনাতেই থাকছে ৩০৭ কোম্পানি।


গত দুই দফায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল, কখনো বুথের ভেতর ঢুকে প্রশংসাপত্র দেখতে চাইছেন, কখনো আবার গ্রামে ঢুকে ভোটারদের শাসাচ্ছেন।


অভিযোগের পর এবার নড়েচড়ে বসল কমিশন। স্পষ্ট নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, বাহিনী প্রশংসাপত্র দেখছে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি আগামী দফাগুলোতে যাতে না দেখা যায়। কেন্দ্রীয় বাহিনী পরিচয়পত্র দেখতে চাইতে পারবে না

Post a Comment

Previous Post Next Post