ইসলাম গ্রহণে যে ঘটনায় অনুপ্রাণিত

পাকিস্তা'নের কিংবদ'ন্তি ক্রিকে'টার মো'হাম্মদ ইউসুফে'র নাম যে আ'গে ইউ'সুফ ইয়ো'হানা ছিল তা সবার'ই জানা। ৩১ বছর বয়'সে ধর্মান্তরিত হয়ে নাম বদলে নিজের নাম মোহাম্মদ ইউসুফ রাখেন। স্ত্রী তানিয়ার নাম বদলে রাখেন ফাতিমা। ২০০৫ সা'লের জুনে খ্রিষ্টধর্ম ছেড়ে ইস'লামের ছায়া'তলে আসেন ইউসুফ। আর ধর্মান্তরি'তের বিষয়ে কেউ তা'কে চাপ প্রয়োগ করে'নি বলে জানিয়েছেন এই সাবেক পাক অধিনায়ক। ইসলামের মহিমায় আকৃষ্ট হয়েই তিনি এ ধর্মে দীক্ষিত হয়েছেন। সম্প্রতি উইজডেনকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে নিজের ধর্মান্তরিত হওয়ার গল্প শুনিয়েছেন মোহাম্মদ ইউসুফ। যেখানে তিনি বর্ণনা করেছেন, কীভাবে আর কাকে দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে ইসলামধর্ম গ্রহণ করেছেন তিনি। মূলত ইউসুফের ইসলামধর্ম গ্রহণের পেছনে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব রেখেছেন পাক দলের এক সময়ের সেরা ওপেনার ও ইউসুফের সতীর্থ সাঈদ আনোয়ার। এ বিষয়ে ইউসুফ বলেছেন, ‘ইসলাম গ্রহণের ক্ষেত্রে কেউ আমাকে জোরজবরদস্তি করেনি। এখানে সত্যটা হলো, আমি সাঈদ আনোয়ারের খুব ঘনিষ্ঠ বন্ধু। ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই মাঠ এবং মাঠের বাইরে আমাদের দারুণ বন্ধুত্ব ছিল। কিশোর বয়স থেকেই আমরা একসঙ্গে অনেক ম্যাচ খেলেছি। আমি সাঈদের সঙ্গে এত সময় কাটিয়েছি যে, ওর বাবা-মা আমাকে তাদেরই ছেলে মনে করে।’ মোহাম্মদ ইউসুফ বলতে থাকেন, ‘আমি যখন ওদের বাড়িতে যেতাম, দেখতে পেতাম তারা কী সুন্দর শান্তিপূর্ণ এবং শৃঙ্খলার মধ্যে জীবন কাটাচ্ছে। এটা আমাকে সত্যিই ভাবিয়েছে। অবাক করেছে। অনুপ্রাণিত করেছে। বিষয়টি এমন নয় যে, ধর্মপ্রাণ হওয়ার পর সাঈদ আনোয়ার এমন চরিত্রের। তার আগে থেকেই আমি ওকে দেখছি। তাদের পরিবার চমৎকার ও শান্তিপূর্ণ। এরপর ঘটে যায় সেই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। সাঈদের মেয়ের মারা যায়। সাঈদ আনোয়ার পুরোপুরি ধর্মের প্রতি ঝুঁকে পড়ে।বিষয়টি আমাকে আরো আবেগী করে তোলে। এটা আমার জন্য অনেক বড় অনুপ্রেরণা ছিল। বলতে গেলে এটাই আমার ইসলামের পথে আসার প্রধাণ কারণ।’ মোহাম্মদ ইউসুফ দাবি করেন, ইসলাম গ্রহণের পর পরই তার খেলার ধার আরো বেড়ে যায়। ২০০৫ সালে ধর্মান্তরিত হওয়ার পরের মৌসুমে টেস্টে বিশ্বরেকর্ড গড়েন। হ্যাট্রিক সেঞ্চুরি হাঁকান। একবছরে সর্বোচ্চ ১৭৮৮ রান করে কিংবদন্তি ক্যারিবীয় ক্রিকেটার স্যার ভিভিয়ান রিচার্ডসের রেকর্ডটি ভাঙেন। উইজডেনকে সাক্ষাৎকারে ইউসুফ বলেন, ‘২০০৫ সালের শেষ দিকে আমি মুসলিম হয়ে যাই এবং প্রথমবারের মতো নামাজ আদায় করি। এর পর আমি দাড়ি রাখা শুরু করি এবং নিজের মধ্যে অন্যরকম শান্তি অনুভব করি, যা আমার রাস্তায় আসা সব চ্যালেঞ্জ জিততে অনুপ্রাণিত করে। আমার বিশ্বাস—ইসলামধর্ম গ্রহণ করায় ২০০৬ সালের অসাধারণ পারফরম্যান্সকে আল্লাহর কাছ থেকে বিশেষ উপহার হিসেবে পেয়েছি।’ পাকিস্তান ক্রিকেটের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র মোহাম্মদ ইউসুফ। যার ব্যাটে ভর করে পাকিস্তান অনেক ম্যাচ ও সিরিজ জিতেছে। ক্যারিয়ারে ৯০ টেস্টে ৭৫৩০ রান করেছেন ইউসুফ। ২৮৮ ওডিআই খেলে তার সংগ্রহ ৯৭২০ রান। বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারে টেস্টে ২৪টি ও ওয়ানডেতে ১৫টি সেঞ্চুরি রয়েছে। ওয়ানডেতে তার হাফসেঞ্চুরির সংখ্যা ৬৪টি। তথ্যসূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

Post a Comment

Previous Post Next Post